শরীয়তপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাহিম রাজ্জাক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী
এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেক্সঃ শরীয়তপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাহিম রাজ্জাককে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আজ সোমবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ আহম্মেদ খান উপনির্বাচনে নাহিম রাজ্জাক একমাত্র প্রার্থী থাকায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ১৯ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুযায়ী তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন।
আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা সাবেক মন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক ২৩ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করলে ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন এ আসনটি শূন্য ঘোষণা করেন। আওয়ামী লীগ রাজ্জাকের ছেলে নাহিম রাজ্জাককে মনোনীত করে। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নাহিম রাজ্জাক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক টি আই এন মহিতুল গনি ১৬ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। মনোনয়নপত্রের ত্রুটি থাকায় ১৯ ফেব্রুয়ারি বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা মহিতুল গনির মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। মহিতুল গনি এ আদেশের বিরুদ্ধে ২২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশ বহাল রেখে তাঁর আপিল খারিজ করে দেন। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মহিতুল গনি রোববার উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন। উচ্চ আদালত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ কেন অবৈধ হবে না, এ মর্মে রুল জারি করেন এবং মহিতুল গনিকে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে সুযোগ দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। নির্বাচন কমিশন উচ্চ আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ করে অ্যাপিলেট ডিভিশনে আপিল করেন। অ্যাপিলেট ডিভিশন উচ্চ আদালতের রায়ের কার্যকারিতা ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তা একমাত্র প্রার্থী নাহিম রাজ্জাককে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য ঘোষণা করেন। আবদুর রাজ্জাকের ছেলে নাহিম রাজ্জাক ঢাকার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলে প্রাথমিক ও ভারতের দার্জিলিং সেন্টপল স্কুল থেকে মাধ্যমিক, আজমিরের মেও কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ালেখা শেষ করেন। এরপর লন্ডনের মিডলসেকস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে স্নাতক ও কিংসটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর লন্ডনের প্রাইম অটোমোবাইল কোম্পানিতে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আবদুর রাজ্জাক আহত হলে নাহিম রাজ্জাক দেশে ফিরে আসেন। এর পর থেকেই তাঁর বাবার সঙ্গে নির্বাচনী এলাকার রাজনীতির হাল ধরেন।
নাহিম রাজ্জাককে সংসদ সদস্য ঘোষণা করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ইউনিয়নে আনন্দ মিছিল বের করেছে। জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা শহরে মিষ্টি বিতরণ করেছেন। বিজয়ী নাহিম রাজ্জাক বলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমাদানের পর থেকেই তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত ছিল। এখন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এলাকার মানুষ আমার বাবার রেখে যাওয়া কাজ সম্পন্ন করার জন্য যে দায়িত্ব দিয়েছে, আমি যথাযথভাবে তা পালন করব। এলাকার সাধারণ মানুষের পাশে থাকব।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ আহম্মেদ খান জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিতুল গনির মনোনয়নপত্রে ত্রুটি থাকায় বাছাই পর্বে তা বাতিল হয়ে যায়। এরপর তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে কমিশন আগের রায় বহাল রাখে। বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। উচ্চ আদালতের রায়ে আইনি জটিলতা না থাকায় এবং নাহিম রাজ্জাক একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।