ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাস একসূত্রে গাঁথাঃ ঢাবি উপাচার্য
মাহবুব আলম, এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবনে দুপুরে প্রথম পতাকা উত্তোলনের ছবি সম্বলিত ‘সংগ্রামী চেতনা’ নামক ম্যুরাল উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এ উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উৎসবের আয়োজন করা হয়।দুই দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে উৎসবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও একটি বিশাল জাতীয় পতাকা সেলাই করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। ঢাবির কলা ভবনের সামনের দেয়ালে ২৫০ বর্গফুটের টাইলসের ম্যুরালটির শিল্পী ঢাবির চারুকলার মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মহসীন কবীর।ম্যুরাল উদ্বোধনের আগে আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘স্বাধীনতার এই মাসে মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার করতে হবে। কারণ, ৩০ লাখ শহীদের আত্মা ও দেশের ১৬ কোটি মানুষ এ বিচার চান। আর তাই কোনোভাবেই যেন এ বিচার অপূর্ণ না থাকে।’ তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাস একসূত্রে গাঁথা। আমাদের বিভিন্ন আন্দোলনে ছাত্র সমাজের অনেক ভূমিকা রয়েছে। বাংলার ছাত্র সমাজই আমাদের স্বাধীনতার পতাকা প্রথম বুকে ধারণ করেছিলো। আর তাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উবুদ্ধ হয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
জাতীয় পতাকা উৎসবের আহ্বায়ক নাজমুল হোসেনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম ,অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সহায়তাকারী বিদেশী ফাদার মারিনো রিগান, ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। জাতীয় পতাকা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জয়ধ্বনি সাংস্কৃতিক সংগঠন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বিশেষ নাটিকা ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন জয়ধ্বনি সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা। শিবনারায়ণ দাশ মানচিত্র খচিত বাংলাদেশের জাতীয পতাকার প্রথম ডিজাইনার। তিনি একজন ছাত্রনেতা ছিলেন। ১৯৭০ সালের ৬ জুন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালযরে শেরে বাংলা হলের ৪০১ নং (উত্তর) কক্ষে রাত এগারটার পর পুরো পতাকার ডিজাইন সম্পন্ন করেন। এ পতাকাই পরবর্তীতে ১৯৭১ এর ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযরে বটতলায় উত্তোলিত হয়। কুমিল্লা ভিক্টোরিযা কলেজে টানানো তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইউব খানের ছবি পদদলিত করার কারণে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করা হয়। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ৩৫ জন আসামির ১৭তম সদস্য ছিলেন তিনি। কিন্তু আজো তার ভাগ্যে কোন সম্মাননা উঠে নি। তিনি পান নি কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। অবজ্ঞা আর আবহেলায় আছে মানচিত্র খচিত বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ডিজাইনারের নাম। তাকে শুধু বইয়ের সাধারণ জ্ঞানে জানা যায়।তিনি অবহেলিত, চির অবহেলিত। আমরা তাকে প্রাপ্য সম্মান দিতে পারি নি। আমরা এমনই জাতি বেচে থাকতে কাউকে সম্মান দিতে পারি না। কাউকে সম্মান করতে পারি না। সম্মান করতে ভুলে গেছি।