রাজধানীর ফুটপাতে মোটরসাইকেল না চালানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
এনামুল হক,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ রাজধানীবাসীর স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে ফুটপাতগুলোতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি না দেয়াসহ কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। ৫মার্চ দুপুরে বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান ও বিচারপতি হাবিবুল গণি সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পৃথক দুটি রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারির পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন এই নির্দেশ দেন।
ঢাকা শহরের যান্ত্রিক পরিবহনের জন্য রাস্তার আয়তন, হাঁটার জন্য পথের আয়তন, কতগুলো ফ্লাইওভার রয়েছে, কতগুলো জেব্রা ক্রসিং রয়েছে এর সংখ্যা তালিকা আকারে আগামী ১০ এপ্রিল আদালতে দাখিল করতে সিটি করপোরেশনের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া গত এক বছর থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন রাস্তায় রিকশা চলাচল বন্ধে কোন বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে কিনা, দেয়া হয়ে থাকলে তা ওইদিন দাখিল করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আদালত রাজধানীতে বাস, মিনিবাসসহ যান্ত্রিক যানের রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা ১০ এপ্রিলের মধ্যে দাখিল করতে বিআরটিএকে বলেছেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন সড়কে কতগুলো বাস, মিনিবাস চলাচল করে তার তালিকাও ওই সময়ের মধ্যে দাখিল করতে বিআরটিএকে বলা হয়েছে। আদালতের অপর নির্দেশনায় ফুটওভার ব্রিজে থাকা বিলবোর্ড ও হোল্ডিংগুলো আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে অপসারণ করতে ঢাকা সিটি করপোরেশন ও ঢাকা মহানগর পুলিশকে বলা হয়েছে। এছাড়া কদম ফোয়ারা, মাজার গেটের সামনে, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, মৎস্য ভবন পয়েন্ট, পথচারীদের চলাচল নিশ্চিত করতে জেব্রা ক্রসিং মার্ক এবং পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অযান্ত্রিক যান (রিকশা, বাইসাইকেল) চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কে এম জাবির ও আইনুরনাহার সিদ্দিকা জনস্বার্থে পৃথক রিট করেন। তাদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম ও এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। এছাড়া বুয়েটের অধ্যাপক ড. সারওয়ার জাহান ও আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকি আদালতের আহ্বানে মতামত তুলে ধরেন। রাজধানীতে রিকশা চলাচলে অযৌক্তিক বিধি নিষেধ আরোপ করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকাবাসীদের রাস্তা ও ফুটপাতে চলাচলে সমান সুবিধা নিশ্চিতের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। এছাড়া হাঁটার জন্য ও অযান্ত্রিক যানবাহনের জন্য প্রকল্প গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন উচ্চ আদালত।
রাজধানীবাসীর জন্য পর্যাপ্ত চলাচলের পথের ব্যবস্থা করতে এবং হাঁটার পথ ও অযান্ত্রিক যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এ মর্মে কারণ দর্শাতে বলেছেন আদালত। ফুটপাতে অবাধে চলাচলের জন্য বাধা দূর করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না একইসঙ্গে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগরে গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়ের জন্য মহানগর চলাচল কর্তৃপক্ষ গঠন করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়। একইসঙ্গে ঢাকা শহরের গণপরিবহনে স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এ মর্মেও কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রসচিব, যোগাযোগ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ডিসিসির উত্তর ও দক্ষিণের প্রশাসক, বিআরটিএর চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।