যাত্রাবাড়ীতে নকল কীটনাশক কারখানার সন্ধান
নিজস্ব প্রতিনিধি, এসবিডি নিউজ২৪ ডট কমঃ রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার মাতুয়াইলে নকল কীটনাশক তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। সরকারি-বেসরকারি নামিদামি ব্র্যান্ড এবং ভুয়া কোম্পানির নামে ইট, বালু, রং ও কেমিক্যাল মিশিয়ে দানাদার কীটনাশক তৈরি করা হতো এ কারখানায় ২ বছর ধরে। গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রায় দুই টন নকল কীটনাশক, প্যাকেট, কেমিক্যালসহ কীটনাশক তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করে। তবে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ মঙ্গলবার রাত সোয়া ৯টায় মাতুয়াইলের দক্ষিণ কেরানীপাড়ার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এ নকল কীটনাশকের কারখানার সন্ধান পায়। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার কারখানার মালিক আজাদ রহমান, সহযোগী জয়নাল হাজারী, বাড়ির মালিক আবদুস সবুর মিয়া ও তার দুই ছেলে মোমিন মিয়া, আইয়ুব মিয়ার নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। সূত্র জানায়, ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার সাতগাছী গ্রামের আজাদ রহমান এর আগে নিজ জেলা ঝিনাইদহেও নকল কীটনাশক তৈরি করে বাজারজাত করেছিল। তার বিরুদ্ধে মামলা হলে পালিয়ে ঢাকায় এসে আবার নকল কীটনাশক তৈরির কারখানা খুলে বসে। এই নকল কীটনাশক তৈরির কারখানা সম্পর্কে কোনাবাড়ী পুলিশফাঁড়ির ইনচার্জ জানলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পেস্টিসাইড রেগুলেশন অফিসার (উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং) নাজমুল আহসান নাজিম বলেন, স্বর্ণা বাংলা এগ্রোভেট কোম্পানির, সবুজ বাংলা এগ্রো কেমিক্যালস লিমিটেড এভার গ্রিন বাংলাদেশ নামে কোনো কোম্পানির কীটনাশক উৎপাদন কিংবা বাজারজাতের অনুমোদন (লাইসেন্স) নেই। সারাদেশেই একটি অসাধু চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অস্তিত্বহীন কোম্পানির নামে এবং নামি ব্র্যান্ডের নামে নকল কীটনাশক তৈরি করে কৃষকদের প্রতারিত করে আসছে। এদের প্রতিরোধে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি। কারখানা থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ফুরাডান-৫জি, লাইসেন্সধারী র্যাভেন এগ্রো কেমিক্যালস লিমিটেডের বাসুদেব-১০জি, আলফা এগ্রো লিমিটেডের বিস্টারেন-১০জি, হাই কেয়ার এগ্রোভেট লিমিটেডের রেকাফুরান-৫জি এবং ভুয়া কোম্পানি স্বর্ণা বাংলা এগ্রোভেট কোম্পানির কম্পোডিন-১০জি, সবুজ বাংলা এগ্রো কেমিক্যালস লিমিটেডের ব্রিডান-৫জি, এভার গ্রিন বাংলাদেশের গ্রিন ফুরান-৫জি ও বাসুডিন ডায়াজিনন, ফুরাসান, জিডান, কার্বোফুরান ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত বস্তাভর্তি প্রায় ২ টন কীটনাশক, বিপুল পরিমাণ খালি প্যাকেট, ২ ড্রাম কেমিক্যাল, প্যাকেট সিলার মেশিন, ডাইসসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
যাত্রাবাড়ী থানার এসআই আসলাম উদ্দীন জানান, আসামিরা আবদুস সবুর মিয়ার একটি টিন শেড ঘরে প্রায় ২ বছর ধরে অবৈধভাবে নামিদামি ব্র্যান্ড এবং অস্তিত্বহীন কোম্পানির নামে কীটনাশক উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছিল। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।