নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক গোন্ডগোল
মোক্তার হোসেন,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের দাবিতে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্র্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করেছে। ভাঙচুর করেছে শিক্ষকদের একটি বাস, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রারের অফিসরুম। এতে ২ জন শিক্ষক আহত হয়েছে। অন্যদিকে ক্যাম্পাসে ছাত্ররা যেন নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে কোনো অস্থিতিশীল সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আগামীকাল শনিবার থেকে ছাত্র সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ইবি কর্তৃপক্ষ। এদিকে নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থী উদ্ধার না হলে ১৩ মার্চ থেকে ছাত্র ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকেই বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনুষদ ভবনে একত্রিত হতে থাকে। এমনকি সকল বিভাগের ক্লাসরুমে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যেতে অনুরোধ করে এবং তাদের উদ্ধারের সংক্রান্ত লিফলেট বিতরণ করে। লিফলেটে উল্লেখ থাকে বেলা ১১টায় অনুষদ ভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হবে। নির্ধারিত সময় বেলা ১১টায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অনুষদ ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক আধাঘণ্টা অবরোধ করে সমাবেশ করতে থাকে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে প্রশাসন অবরোধ করে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, আগামী ১২ মার্চের মধ্যে ওই নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে প্রশাসন ব্যর্থ হলে ১৩ মার্চ থেকে ক্যাম্পাসে অনির্দিষ্টকালের ছাত্র ধর্মঘট করে ক্যাম্পাস অচল করে দেয়া হবে। এ সময় আন্দোলনকারীরা ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শাহজাহান আলী ও রেজিস্ট্রার ড. মসলেম উদ্দিনের অফিসের জানালায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর করে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রার পৃথক পৃথকভাবে ভিসি প্রফেসর ড. এম আলাউদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এদিকে আন্দোলনকালে বেলা ১২টায় শিক্ষকদের একটি নিজস্ব বাস ক্যাম্পাস থেকে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে বের হলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাসে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর করেছে। এ সময় বাসের কাঁচে ২ জন শিক্ষক আহত হন। আহতরা হলেন ফলিত পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম ও বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক সুধাংশু কুমার বিশ্বাস। আহতদের ইবির চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে বলে জানা যায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীকে শান্ত করতে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর মো. মহব্বত হোসেন ও সহকারী প্রক্টররা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের শান্ত করে এবং তাদের ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করায়। পরে দুপুর ১টায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের তালা খুলে দেন।
এদিকে ছাত্রদের হামলায় শিক্ষক আহত হওয়ার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও শরিয়া অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শাহজাহান ম-লকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন_ ইসলামের ইতিহাস সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর মো. জাহাঙ্গীর আলম, বায়োটেকনেলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ।