র্যাবের অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রায় ৪০০ সদস্যকে সরাসরি চাকরিচ্যুত
নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ নানা অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে র্যাবের প্রায় ৪০০ সদস্যকে সরাসরি চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক (ডিজি) মোখলেছুর রহমান। র্যাবের অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ২৫ মার্চ (সোমবার) আয়োজিত বিশেষ দরবারের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির আজ প্রথম দিন। সকালে স্বাধীনতা দিবস ও র্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাহিনীর পতাকা উত্তোলন করেন র্যাবের মহাপরিচালক। বিশেষ দরবারে র্যাবের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময়কালে সাম্প্রতিক সময়ে র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে ডিজি বলেন, বিভিন্ন বাহিনী থেকে বাছাই করে র্যাবে লোক আনা হয়। তারপরও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটছে। এসব বিষয়ে র্যাবের নীতি জিরো টলারেন্স বলে তিনি মন্তব্য করেন। ডিজি বলেন, ‘র্যাবের নিজস্ব তদন্ত সেল রয়েছে। কারোরই পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। সাম্প্রতিককালে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধেও ডাকাতির মামলা হয়েছে। সবকিছু বিধি মোতাবেক চলছে।’
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, ‘সব মামলা একরকম নয়। মামলার তদন্তের জন্য সঠিক প্রমাণ প্রয়োজন। তাই এ মামলায় একটু সময় লাগছে। অতীতে কোনো মামলারই রহস্য অনুদঘাটিত থাকেনি। তাই এ মামলারও ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’
দরবারে দেয়া বক্তব্যে র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, অনেক সফলতার পরও র্যাবের কিছু দুর্বলতা ও নৈতিক-স্খলনজনিত ঘটনা র্যাবের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং সহ্য করা হবে না বলে তিনি র্যাব কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেন। তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থ ও প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে থেকে সবাইকে অপরাধ ও সন্ত্রাস দমনের জন্য অর্পিত দায়িত্ব সুচারুভাবে পালনের নির্দেশ দেন।
র্যাব সদস্যদের দ্বারা কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন কোনোভাবে হয়রানি বা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং মানবাধিকার যেন লঙ্ঘিত না হয়, সে বিষয়ে বিশেষভাবে সজাগ থাকার জন্য র্যাবের ডিজি সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি র্যাবের সফলতা তুলে ধরে বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, চরমপন্থী দমন, আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে র্যাব সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। তাঁরা বিভিন্ন বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও পেয়েছেন। মানবাধিকার রক্ষায় র্যাব সব সময়ই সচেষ্ট থাকে বলে তিনি মন্তব্য করেন। র্যাবের ডিজি জানান, র্যাবের জন্য আধুনিক যানবাহন, অস্ত্র, গোয়েন্দা সরঞ্জামাদিসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ বছরই যুক্ত হচ্ছে হেলিকপ্টার। এ ছাড়া র্যাবের একটি অত্যাধুনিক ফরেনসিক গবেষণাগার রয়েছে।
অনুষ্ঠানে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল মজিবুর রহমান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) আফতাব উদ্দিন আহমেদ, র্যাব সদরের বিভিন্ন উইংয়ের পরিচালক, ঢাকার ব্যাটালিয়নগুলোর অধিনায়কসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।