প্রধানমন্ত্রীর চট্রগ্রাম সফরঃ ব্যানার আর ফেষ্টুনের বাহারে বন্দি বন্দর নগরী!
জালালউদ্দিন সাগর, এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ২৮ মার্চ চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশাল জনসভায় ভাষণ দিবেন। প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রামে আসাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামটি, বান্দরবান তথা বৃহত্তর চট্টগ্রামে চৌদ্দদল ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় একাধিক নেতা এসবিডি নিউজ24 ডট কম কে জনান, ‘সর্বকালের বৃহৎ জনসভা হবে চট্টগ্রামে।’
২৮ মার্চ জনসভাকে জনসমূদ্রে পরিণত করার জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। লিফলেট, পোষ্টার, ব্যানার আর রাজনৈতিক বিলবোর্ডে সয়লাব বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। বাদ পড়েনি শহীদদের নামের ফলক। নগরীর ২ নং গেইট চত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী শহীদদের যে নামের ফলক আছে সে নাম ফলকে সাঁটানো হয়েছে পোষ্টার। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ স্থানীয় নেতার পোষ্টার লাগানো হয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামের ওপড়। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে বিপ্লব উদ্যানে আগত অনেকেই এ ব্যাপারটির সমালোচনা করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
নগরীর বহদদ্দার হাট, ২ নং গেইট, জিইসি, টাইগার পাস থেকে শুরু করে আগ্রাবাদ, বন্দর, ইপিজেড, সী-বিচ সব জায়গাতে সোভা পাচ্ছে রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের ব্যানার আর বিলবোর্ড। ছাত্র নেতা থেকে শুরু করে মন্ত্রী আফসারুল আমীন, হাসান মাহমুদ, নূরুল ইসলাম বিএসসি (এমপি), এমপি তৈয়বা, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দীন চৌধূরী, মহীউদ্দিন বাচ্চু, সিডিএ চেয়ারম্যান আবাদুচ সালাম সহ প্রায় হাজার খানেক নেতা কর্মী প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে, জনসভাকে সফল করার আহ্বান চেষ্টা করেছেন। আর এ আহ্বানের প্রচার মাধ্যম হচ্ছে পোষ্টার আর ব্যানার। নগরীর গুরুত্ব, ঝুঁকিপূর্ণ সব মোড়, ট্রাফিক সিগনাল এখন পোষ্টার আর ব্যানারের দখলে। নগর পরিকল্পনাবিদরা মনে করছেন এসব ব্যানার, বিলবোর্ড নগরীর স্বাভাবিক সৌন্দর্য্যকে ম্লান করছে। নগরী হারাচ্ছে তার যৌবন। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম আসাকে কেন্দ্র করে অপরিকল্পিত ভাবে পোষ্টার আর বিলবোর্ডের এ প্রদর্শনী অনেকটা জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। অনেকেই মনে করেন, পোষ্টার, ব্যানার প্রদর্শনির একটা নীতিমালা প্রয়োজন।
এদিকে ডিজিটাল ফেষ্টুন,ব্যানার ছাঁপানোর প্রতিষ্টান গুলোর ব্যাবসা এখন রমরমা। নগরীর মুরাদপুর, চকবাগার, আন্দরকিল্লায় অবস্থিত বিভিন্ন ডিজিটাল ব্যানার ছাঁপাকারী প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৮ মার্চ জনসভাকে কেন্দ্র করে প্রায় লক্ষাধীক স্কয়ার ফিট ডিজিটাল ব্যানার ছাঁপানো হয়েছে। প্রতি স্কয়ার ফিট নূন্যতম ২০ টাকা হিসেবে প্রায় বিশ কোটি টাকা খরচ হয়েছে শুধূ ব্যানার আর ফেষ্টুনের পিছনে। সে হিসেবে প্রায় লক্ষ লক্ষ পোস্টার সাঁটা হয়েছে নগরীর বিভিন্ন দেয়ালে, যার আনুমানিক ব্যায় প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যানার ব্যবসায়ী জানান, ‘ প্রায় ৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে রাজনৈতিক এহেন প্রচার বাণিজ্যে’।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফর নিয়ে জাতীয় একাধিক দৈনিকে ফলাও করে ছাঁপা হয়েছিলো ‘ তোরণের শহর রংপুর’।
রাস্তাঘাটে হাজার হাজার তোরণ বানিয়ে শুধূ অর্থের অপচয় হয়নি, শহরবাসী উপভোগ করেছে অসহনিয় যানজট। সেদিক বিবেচনায় চট্টগ্রামে তোরন নাই বললেই চলে। তোরনের পরিবর্তে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক প্রচার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে বড় বড় বিজ্ঞাপনি বিলবোর্ডে ডিজিটাল ব্যানার আর ফেস্টুন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, শহরে যে পরিমান পোষ্টার আর ব্যানার লাগানো হয়েছে তা পরিস্কার করতে কর্পোরেশনের অতিরিক্ত জনবলের প্রয়োজন পরবে।