ভোগান্তির আরেক নাম “বাবুবাজার ব্রিজ”

ভোগান্তির আরেক নাম “বাবুবাজার ব্রিজ”

 

বিশেষ প্রতিনিধি, এসবিডি নিউজ২৪ ডট কমঃ সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে আছে। যাত্রী ওঠানো-নামানো হচ্ছে। হাঁকডাক চলছে। কোনো বাসের নিচে শুয়ে মেরামতের কাজ করা হচ্ছে। কোনোটার চাকা খুলে লাগানো হচ্ছে। একপাশে অটোরিকশাচালকেরা যাত্রীর আশায় বসে আছেন। হিউম্যান হলারের সহকারীরা যাত্রীর জন্য চিৎকার করছেন। সেতুর ওপরেই ঘোরানো হচ্ছে বড় বড় বাস। এটি বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুর (বাবুবাজার ব্রিজ) ওপরের নিত্যদিনের চিত্র। সেতুটির ওপর প্রতিদিন ব্যাপক যানজট। মানুষের ভোগান্তি। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের (দক্ষিণ) উপকমিশনার নজমুল হাসান অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, ‘ওই সেতু নিয়ে আমরা খুবই সমস্যায় আছি। প্রতিদিনই সেখান থেকে দু-তিনটি করে গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানো হচ্ছে। তবু কিছু হচ্ছে না। যতক্ষণ রেকার নিয়ে অফিসাররা থাকেন ততক্ষণ সেতু পরিষ্কার থাকে। তারপরই আবার অরাজকতা শুরু হয়।’
সেতুটির টোল আদায়কারী মেসার্স আফতাব উদ্দিন অ্যান্ড সন্সের পরিচালক মো. রিয়াজ বলেন, যানজটের কারণে সেতু দিয়ে যান চলাচল কমে যাওয়ায় তাঁদের টোল আদায়ও কমে যাচ্ছে। যানজট কমানোর জন্য তাঁরাও দুজন লোক রেখেছেন। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। এ ব্যাপারে পুলিশকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। সড়ক ও জনপথের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মঞ্জুরুল আলম বলেন, ঢাকা জেলা প্রশাসনের একাধিক বৈঠকে ওই সেতুর ওপরকার যানজট নিরসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, সেতুর ওপর বহু দিন থেকেই রয়েছে অটোরিকশা ও হিউম্যান হলারের স্ট্যান্ড। সম্প্রতি তা বাসস্ট্যান্ডে রূপ নিয়েছে। তবে বাসচালকেরা বলছেন, উড়ালসড়ক নির্মাণের কারণে যাত্রাবাড়ী ও গুলিস্তানে নির্ধারিত স্টপেজে যেতে তাঁদের অনেক যানজট পেরোতে হয়। তাই সেতুর ওপরেই দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা। ঢাকা প্রান্ত থেকে সেতুতে উঠতেই দেখা যায়, অটোরিকশা ও হিউম্যান হলারগুলো দাঁড়িয়ে রয়েছে। পেছনের গাড়িগুলো ভেঁপু বাজিয়েই চলেছে। কিন্তু তাঁদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। সেতুর মাঝামাঝি টোলঘরের আশপাশে সারি সারি বাস দাঁড়ানো। যাত্রী ও মালামাল তোলা হচ্ছে। সেতুর ওপরই ঘোরানো হচ্ছে বাস।
স্থানীয়রা জানান, গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজার থেকে বাসে বা অটোরিকশায় সেতুতে উঠতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা। সেতুর গোড়ায় নিত্য যানজট লেগে থাকে। সেতু থেকে নেমে ঢাকায় ঢোকার সময়ও একই অবস্থা। কেরানীগঞ্জের সেলিম আহমেদ বলেন, সেতুর ওপর বাসস্ট্যান্ডের কারণে তাঁদের এলাকার কয়েক লাখ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। ঢাকার প্রান্তে জায়গা পাওয়া না গেলে কেরানীগঞ্জে জায়গা দেয়া যেতে পারে। সেতুর ওপর কেন বাস দাঁড়াবে?
মুন্সিগঞ্জের ফল ব্যবসায়ী আবুল হাসনাত বলেন, সেতুর ওপরের যানজটের কারণে ঢাকায় এলে পুরো দিন পার হয়ে যায়। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ার ফজলুল হক বলেন, প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় দুবার ভয়ংকর যানজট লেগে যায় সেতুর ওপর।

বিশেষ প্রতিনিধি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।