বাংলাদেশের মানুষ সকল অশুভের বিপরীতে আন্দোলন করেঃ তারানা হালিম

বাংলাদেশের মানুষ সকল অশুভের বিপরীতে আন্দোলন করেঃ তারানা হালিম

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ২৪ ডট কমঃ সম্প্রতি সড়ক দূর্ঘটনার হার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক দশকে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ সড়কের উপর প্রাণ হারিয়েছে, পঙ্গু জীবন যাপন করছে অগণিত মানুষ, সম্পদের হানি হয়েছে অপরিমেয়। যার খেসারত দিতে হচ্ছে পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রীয়ভাবে। তরপরও সংশ্লিষ্টদের টনক নড়ছে না। তেমন কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অথচ সড়ক দূর্ঘটনায় মন্ত্রী, সচিব, পুলিশ, ডাক্তার, প্রকৌশলী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গাড়ির  চালক, সাংবাদিকসহ সাধারণ জনতার মধ্য থেকে অনেকেই অকালে ঝরে পড়ছেন। তাই অবিলম্বে এই মহামারী প্রতিরোধে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। আজ সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাইফ ফাউন্ডেশন এবং ফ্যামিলিজ ইউনাইটেড এগেইনস্ট রোড একসিডেন্ট (ফুয়ারা)’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মানব বন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

 

সংসদ সদস্য তারানা হালিম বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সকল অশুভের বিপরীতে আন্দোলন করে তার অধিকার আদায় করেছে। সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য এটি আমাদের আন্দোলন। যে চালক সঠিক নিয়ম মেনে গাড়ি চালাচ্ছেন তিনি যেমন মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। আবার যিনি নিয়ম ভঙ্গ করে গাড়ি চালাচ্ছেন যার বলি হচ্ছেন দেশের হাজার হাজার মানুষ তাকে অবশ্যই অপরাধী বলতে হবে। তার অপরাধ প্রমাণ সাপেক্ষে উপযুক্ত শাসিত্মর ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে কেউ এর পুনরাবৃত্তি করতে সাহস না পায়।

 

সাইফ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন সামিয়া হালিম বলেন, সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে কোন একজনকে আলাদাভাবে দায়ী করলে এর সমাধান সম্ভব নয়। বরং সামগ্রিক ব্যবস্থার মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে। এক্ষেত্রে সকলকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। অপরাধী চালককে যেমন শাসিত্মর আওতায় আনতে হবে তেমনি গাড়ির মালিক, সড়কের নকশা প্রণয়নকারী, ঠিকাদার এবং সংশ্লিষ্ট সকলের জবাবদিহীতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি আইন-নীতিমালা সংশোধন এবং তার প্রয়োগ এবং প্রয়োজনে অবকাঠামোর মধ্যেও ত্রুটি বিচ্যূতি দূর করতে হবে।

 

কর্মসূচিতে ফুয়ারা’র আহবায়ক ইকরাম আহমেদ বলেন, সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে দূর্ঘটনার তথ্য সংগ্রহ এবং সঠিক পরিসংখ্যান প্রদানের ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। কেননা এ বিষয়ে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং পরিস্থিতির কতটুকু অগ্রগতি তা বোঝার জন্য এর বিকল্প নেই। এছাড়া সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারীদের পরিবারের সহযোগিতায় সমাজের দায়িত্বশীলদের এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্র কর্তৃক এর দায়ভার নিতে হবে। এরূপ মানবিক এবং স্পর্শকাতর বিষয়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের কোন প্রকার দায়িত্বহীন বক্তব্য বাঞ্ছনীয় নয়, যা বিভ্রামিত্ম সৃষ্টি করতে পারে।

 

কর্মসূচি থেকে ঘোষণা করা হয়, আগামীতে বিভিন্ন বাস টার্মিনালগুলোতে চালক, শ্রমিক, মালিক ও যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা চালানো হবে। কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য রাখেন, সম্প্রতি সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত শিশু শিক্ষার্থী সিদরাতুল মুনতাহা পালোমা এর মা সাহেদা বেগম এবং বাবা খালেদ আজমল খান, হামিম এর মা সোনিয়া আক্তার, নিহত অতিরিক্ত সচিব সিদ্দিকুর রহমানের আত্মীয় মাহবুব হাসান, নিহত মনোয়ার হোসেনের স্ত্রী হুসন্ আফরোজ এবং নিহত কনিকা রায়ের পুত্র শুভ। এছাড়া কর্মসূচিতে ছাত্র, শিক্ষক, পেশাজীবি, সাংবাদিকসহ সমাজের সচেতন নাগরিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

নিজস্ব প্রতিনিধি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।