পরলোকে হুমায়ুন ফরীদি
এসবিডি নিউজ২৪ ডট কম,ডেক্সঃ পৃথিবীর এই রঙ্গমঞ্চে আর অভিনয়ের আলো ছড়াবেন না বরেণ্য অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। সোমবার সকালে ৬০ বছর বয়সে মারা গেছেন তিনি।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সোমবার সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডির বাসায় মারা যান এই অভিনয় শিল্পী। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন।
বাসার পরিচারক রুবেল জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফরীদির ঘরে গিয়ে দেখেন তিনি বিছানায় নেই। সাড়াশব্দ না পেয়ে বাথরুমের দড়জা ভেজানো দেখে ভেতরে ঢুকে রুবেল দেখেন ফরীদি ভেতরে পড়ে আছেন। “আমি উনাকে তুলে শাহীন স্যার আর আমাদের ওপর তলার ডাক্তার সাহেবকে খবর দেই। ডাক্তার সাহেবই জানান, উনি মারা গেছেন।” ফরীদির ব্যক্তিগত সহকারী শাহীন জানান, এই অভিনেতা ফুসফুসের জটিলতাসহ আরো কিছু সমস্যায় ভুগছিলেন। হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছিলেন সপ্তাহ দুই আগে।
১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফরীদি। পড়ালেখা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে। তার অভিনয় জীবনের শুরু মঞ্চ নাটক দিয়ে। পরে অসংখ্য টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন।
ঊনিশশ আশি ও নব্বইয়ের দশকে যে কয়েকজন অভিনয় শিল্পী মঞ্চ ও টিভি নাটককে অসম্ভব জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিলেন, ফরীদি ছিলেন তাদেরই একজন। ধারাবাহিক নাটক সংশপ্তকে ‘কান কাটা রমজান’ চরিত্রে অভিনয় করে তিনি নিজেকে নিয়ে যান অন্য উচ্চতায়।
নীল নকশার সন্ধানে, দূরবীন দিয়ে দেখুন, ভাঙ্গনের শব্দ শুনিসহ তার অভিনীত বহু নাটক দীর্ঘদিন মনে রাখবে এ দেশের মানুষ।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন এই শক্তিমান অভিনেতা। তার অভিনীত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে একাত্তরের যিশু, সন্ত্রাস, ব্যাচেলর, জয়যাত্রা ও শ্যামলছায়া অন্যতম।
ব্যক্তিগত জীবনে অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তফার সঙ্গে সংসার শুরু করলেও ২০০৮ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
ফরীদির মৃত্যুর খবরে তাৎক্ষণিকভাবে শোকের ছায়া নেমে আসে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। নাট্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন ধানমন্ডির বাড়িতে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।